ছবি : ঢাকা ইনসাইটস
নরসিংদী শহরের ব্যস্ত সড়কে প্রায় অচল-ভাঙ্গা এক রিকশা নিয়ে জীবিকার সন্ধানে লড়াই করেন এক শ্রবণ ও বাক প্রতিবন্ধী রিকশা চালক ইউসুফ মিয়া। জন্ম থেকেই নেই মুখে কথা বলার ক্ষমতা, নেই শ্রবণ শক্তিও। পাশাপাশি দারিদ্রতার ছোবলে নেই রিকশা কেনার টাকা। দৈনন্দিন ৬০ টাকা জমার বিনিময়ে গ্যারেজ থেকে রিকশা নিয়ে আয় করা টাকায় চলে স্ত্রী, দুই কন্যা সন্তান ও এক ছেলে সন্তান নিয়ে সংসার।
এমন এক রিকশা চালককে দেখে মানবিকতা জেগে উঠে নরসিংদী সদর থানায় কর্মরত এক উপ-পুলিশ পরিদর্শক কবিরুল হক সাগরের। প্রথমে রিকশাটি মেরামতের চিন্তা করলেও সেটি গ্যারেজ মালিকের থাকায় নতুন রিকশা কিনে দেবার চিন্তা করেন। পরে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার সংগঠন (ডব্লিউএবি) " We Are Bangladesh (WAB)" এর মাধ্যমে ৩০ হাজার টাকা ব্যায়ে কিনে দেন একটি পুর্নাঙ্গ রিকশা।
শনিবার বিকেলে নরসিংদী শহরের তরোয়া এলাকার একটি গ্যারেজে ওই প্রতিবন্ধীকে হস্তান্তর করেন রিকশাটি। এসময় নতুন রিকশা হাতে পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন বোবা রিকশাচালক। কৃতজ্ঞতার ভাষা তিনি প্রকাশ করতে না পারলেও, তার চোখের জল ও উচ্ছ্বাস বলে দেয় সবকিছু! নতুন রিকশাটি এই বোবার পরিবারের নতুন আশার আলো হয়ে এসেছে। এতে খুশি তার সহকর্মী ও স্থানীয়রা।
এদিকে মানবিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টি গভীরভাবে নাড়া দেয় বলে পুলিশ কর্মকর্তা জানান, আমরা চাই, কেউ যেন শুধু শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে পিছিয়ে না পড়ে। সমাজের অবহেলিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোই আমাদের মূল লক্ষ্য। এটি শুধু একটি রিকশা উপহার নয়, এটি একটি পরিবারের নতুন স্বপ্নের সূচনা। এটিই প্রথম নয় " We are Bangladesh (WAB)" এর ২৫৫তম সহায়তা এটি। এমন কার্যক্রম দেশব্যাপী আরো চালিয়ে যাবে তারা।
উল্লেখ্য, We are Bangladesh দীর্ঘদিন ধরে সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। গৃহহীনদের ঘর নির্মাণ, রক্তদান কার্যক্রম, হুইলচেয়ার বিতরণ, খাবার বিতরণ, বৃক্ষরোপণ, মসজিদ ও মাদ্রাসা সংস্কারসহ নানাবিধ সামাজিক কর্মকান্ড পরিচালনা করছে সংগঠনটি।
পুলিশের এমন মানবিক কর্মকান্ড পেশাদারিত্বের পাশাপাশি জানান দেবে মানবিক ব্যক্তিত্ববোধের।
মতামত