ছবি : সংগৃহীত
সোমবার (২৪ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের বেঞ্চ এই আদেশ দেয়। এর আগে ২৩ জানুয়ারি চ্যানেল ওয়ানকে আপিল দায়েরের অনুমতি দেওয়া হয়। চ্যানেল ওয়ানের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার রুহুল কুদ্দুস কাজল।
এটি এমন একটি রায় যা শুধুমাত্র একটি টেলিভিশন চ্যানেলের জন্য নয়, বরং দেশের মিডিয়া খাতের জন্য একটি বড় ধরনের আইনি ও সামাজিক মুহূর্ত।
২০০৭ সালে বেসরকারি চ্যানেল ওয়ান শুরু হয়েছিল এবং দ্রুত জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। তবে ২০১০ সালের ২৭ এপ্রিল সরকার একতরফাভাবে চ্যানেলটির সম্প্রচার বন্ধ করে দেয়, যা তখনকার রাজনৈতিক পরিস্থিতির সাথে সম্পর্কিত ছিল।
বিশেষত, সরকার দাবি করে যে চ্যানেল ওয়ান কর্তৃপক্ষ বৈধভাবে ফ্রিকোয়েন্সি বরাদ্দ না নিয়ে সম্প্রচার যন্ত্রপাতি আমদানি করেছিল, যা তাদের বন্ধ করার একটি প্রধান কারণ ছিল। এই পরিস্থিতি নিয়ে চ্যানেল ওয়ান কর্তৃপক্ষ আদালতে গেলে, প্রথমে হাইকোর্টে তাদের আবেদন খারিজ হয়ে যায়।
দীর্ঘদিন পর, আপিল বিভাগের রায়ে চ্যানেল ওয়ানকে আবারও কার্যক্রম চালু করার অনুমতি দেওয়ার মাধ্যমে, এটি স্পষ্ট যে, আইনি প্রক্রিয়া ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত হওয়ার পর, টেলিভিশন চ্যানেলটির মালিক পক্ষের কাছে ন্যায়বিচার প্রদান করা হয়েছে। তবে এই রায় শুধুমাত্র চ্যানেল ওয়ানের জন্য নয়, বরং দেশের গণমাধ্যমের স্বাধীনতা ও প্রাইভেট সেক্টরের প্রতি সরকারের দায়বদ্ধতার এক গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে।
এছাড়া, এই রায় মিডিয়া সেক্টরের উপর সরকারের প্রভাবের একটা নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করবে। ২০১০ সালে চ্যানেল ওয়ানের বন্ধ হওয়া নিয়ে সরকারের বক্তব্য ছিল এটি রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলার জন্য জরুরি, তবে এখন এটি পরিষ্কার যে, একটি গণমাধ্যমের স্বাধীনতার জন্য আইনি রক্ষাকবচ নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
অপরদিকে, গিয়াস উদ্দিন আল মামুনের মতো ব্যবসায়ী যিনি নানা কারণে কারাভোগ করেছেন, তার মুক্তি ও চ্যানেল ওয়ানের পুনঃপ্রচারে ফিরে আসা সমাজের জন্য একটি আলোচনার বিষয়। সরকারের পক্ষ থেকে ক্ষমতায় আসার পর এই ধরনের ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন মামলা হলেও, আদালতের রায়ে তারা যখন পুনঃস্থাপন পায়, তখন এটি আরও জোরালো করে যে, বিচারব্যবস্থা দেশের মূল স্তম্ভ এবং এর মাধ্যমে সকল পক্ষের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়।
সর্বোপরি, এই রায় চ্যানেল ওয়ানকে শুধু সম্প্রচার চালু করতে সাহায্য করবে না, বরং দেশের গণমাধ্যমে স্বাধীনতা ও আইনের শাসনের জন্য একটি শক্তিশালী বার্তা পাঠাবে, যেখানে সংবাদমাধ্যমের ভূমিকা নিঃসন্দেহে আরও শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ হয়ে উঠবে।
মতামত