শিক্ষাঙ্গন

ছাত্রদল নেতার সুপারিশে নকলে ব্যাবহৃত ফোন জব্দ না করে ফেরত দেয়ার অভিযোগ

প্রিন্ট
ছাত্রদল নেতার সুপারিশে নকলে ব্যাবহৃত ফোন জব্দ না করে ফেরত দেয়ার অভিযোগ

ছবি : ঢাকা ইনসাইটস


প্রকাশিত : ১৯ মে ২০২৫, সন্ধ্যা ৮:১৭

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ইংরেজি বিভাগের সেমিস্টার চূড়ান্ত পরীক্ষায় দুজন শিক্ষার্থীকে নকলসহ আটক করা হয়। তারা হলেন ১৬তম আর্বতনের কাজী তাহাসিন এবং সেলিম আহমেদ শিমুল। আটককৃত শিক্ষার্থীদের থেকে নকলে ব্যবহৃত মোবাইল জব্দ করলেও পরে তা তাদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। যা পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরের নিয়ম বহির্ভূত। নিয়ম মতে নকলে ব্যবহার্য সরঞ্জাম তদন্তের জন্য পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তরে জমা দিতে হয়। অভিযোগ রয়েছে নকলসহ আটক শিক্ষার্থীদের বিষয়টি ‘বিবেচনা’ করার জন্য ওই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক এম.এম শরিফুল করিমের সাথে যোগাযোগ করেন কুবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ।

 প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান এই বিষয়টি নিয়ে ওই দিনই হল রুমে ক্ষোভ প্রকাশ করেন উক্ত পরীক্ষা কমিটির সভাপতি ও সহকারী অধ্যাপক শারমিন সুলতানা।

বিভাগীয় সূত্রে জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দুপুর ২ থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত (১৫ মে) ইংরেজি বিভাগের ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের ইন্ট্রোডাকশন টু ফিকসন (ইএনজি- ১১০৪) কোর্সের সেমিস্টার চ‚ড়ান্ত পরীক্ষা ছিলো। পরীক্ষাটি ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ আবর্তনের শিক্ষার্থী সেলিম আহমেদ শিমুল এবং কাজী তাহাসিন ইম্প্রুভমেন্ট (মানোন্নয়ন) পরীক্ষা দেন। ওই দুজন শিক্ষার্থীকে পরীক্ষা চলাকালীন মোবাইল থেকে নকল করা অবস্থায় আটক করেন পরিদর্শকের দায়িত্বে থাকা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক এমডি আবুল হায়াত। এসময় তাঁদের উত্তরপত্র ও মোবাইল নিয়ে ফেলেন তিনি। কিন্তু পরে তাদের থেকে “নকল করেছে” এমন লিখিত স্বীকারোক্তী নিয়ে  মোবাইল দিয়ে দেন বিভাগীয় প্রধান শরিফুল করিমের।

কিন্তু নিয়ম অনুসারে উত্তরপত্র এবং নকলে ব্যবহার করা সরঞ্জাম পরীক্ষানিয়ন্ত্রক দপ্তরে জমা দিতে হয়। এসকল কিছু তদন্ত করে শিক্ষার্থীর অপরাধের মাত্রা বিবেচনা করে পরীক্ষাশৃঙ্খলা কমিটি তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

নকলকৃত পরীক্ষা বাতিল হওয়াটা শাস্তি নয়, এটি নিয়ম।  এমনটি জানান পরীক্ষানিয়ন্ত্রক দপ্তরের প্রধান মোহাম্মদ নরুল করিম চৌধুরী। কিন্তু উক্ত শিক্ষার্থীদের মোবাইল ফিরিয়ে দেওয়ায় তাদের বিষয়ে তদন্ত বাধাগ্রস্ত হবে।

বিভাগের দুজন শিক্ষক ও সেদিন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করা কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, “নকলের জন্য আটক হওয়া দুজন শিক্ষার্থীর বিষয়টি নিয়ে কুবি ছাত্রদলের সদস্য সচিব মোস্তাফিজুর রহমান শুভ মুঠোফোনে বিভাগীয় প্রধান ও বিএনপিপন্থি শিক্ষকদের নেতা অধ্যাপক শরিফুল করিমের সাথে যোগাযোগ করেন” তবে মোস্তাফিজুর রহমান বিষয়টি অস্বীকার করেন। 

এই বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষা কমিটির সভাপতি সহকারী অধ্যাপক শারমিন সুলতানা হল রুমে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন “হুহ, নেতা দিয়ে কল দেয়, কত বড় সাহস” এমনটি জানান হল রুমে অবস্থান করা কয়েকজন পরীক্ষার্থী। এই বিষয়ে শারমিন সুলতানাকে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, “এই বিষয়টি বিভাগের কনফেডিনশিয়াল, তাই এখন কিছু বলতে পারছি না।

ছাত্রদল নেতার ফোন কলের বিষয়ে শরিফুল করিম বলেন, “আমার সাথে অনেকের ইনফরমাল কথা হয়। এই বিষয়ে তো আমি কাওকে বক্তব্য দিবো না।”

নকলের বিষয়ে অভিযুক্ত দুই শিক্ষার্থী জানান, আমাদের ওই দিনই মোবাইল দিয়ে দেওয়া হয়। তবে এবং এই পরীক্ষাটি বাতিল করেছে এমনটি জানানো হয়।