ছবি : ঢাকা ইনসাইটস
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) শুরু হয়েছে প্রত্নতত্ত্ব বিষয়ক দুই দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক সম্মেলন। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ ও বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সম্মেলনে দেশি-বিদেশি গবেষক ও শিক্ষার্থীরা অংশ নিচ্ছেন।
শুক্রবার (১৬ মে) সকাল সাড়ে ৯টায় কুবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের হলরুমে এক উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের সূচনা হয়।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান। সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম।
এছাড়াও সম্মেলনের আহ্বায়ক ছিলেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সোহরাব উদ্দিন এবং স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন বাংলাদেশ ইতিহাস সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. সুরমা জাকারিয়া চৌধুরী। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মুতাসিম বিল্লাহ।
সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কেবল শিক্ষাদানের স্থান নয়, এটি জ্ঞান সৃষ্টি ও তা ছড়িয়ে দেওয়ার কেন্দ্র। আজকের এই আয়োজন সেই দুই উদ্দেশ্যই পূরণ করছে, যা শিক্ষার্থীদের পাশাপাশি উপস্থিত সবার জন্য উপকারী হবে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রত্নতত্ত্ব শুধু অতীতের নিদর্শন সংগ্রহ নয়, এটি আমাদের সভ্যতা, সংস্কৃতি ও সামাজিক বিকাশ বোঝার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। আমাদের সমৃদ্ধ প্রত্নতাত্ত্বিক ঐতিহ্যকে চিহ্নিত করে তা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরা আমাদের দায়িত্ব।”
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ট্রেজারার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, “প্রত্নতত্ত্ব মানে কেবল পুরনো জিনিস খোঁজা নয়; বরং পুরনোকে নতুনভাবে উপলব্ধি করে ইতিহাসকে জানার, শেখার ও লালনের একটি চর্চা। দুর্ভাগ্যজনকভাবে, আমরা ছাত্রজীবনে এই বিষয়ের গুরুত্ব বুঝিনি, যার ফলে সমাজের একটি বড় অংশ এখনও এ বিষয়ে অনীহা বা অজ্ঞতা প্রকাশ করে।”
তিনি আরও বলেন, “প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের এক যুগপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এই সম্মেলন আন্তর্জাতিক মানের জ্ঞান বিনিময়ের প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করবে।"
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. মো. আবুল কাশেম বলেন, “ইতিহাসচর্চার কষ্টিপাথর হচ্ছে প্রত্নতত্ত্ব। আমরা যদি ইতিহাসকে বিভিন্ন স্তরে ভাগ করি—প্রাচীন, মধ্য ও আধুনিক—তবে ভিত্তির স্তরে প্রত্নতত্ত্বকেই দেখতে পাব।”
তিনি আরও বলেন, “ময়নামতির কাছাকাছি এই সম্মেলন আয়োজন করায় আমরা কৃতার্থ। এই অঞ্চলটি আমাদের প্রাচীন ইতিহাস বোঝার জন্য একটি ‘ল্যান্ড অফ ভ্যারাইটিজ’, যা নিয়ে গর্ব করার মতো।”
উল্লেখ্য, সম্মেলনে দেশি-বিদেশি শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীদের শতাধিক প্রবন্ধ উপস্থাপিত হবে। ১৬ ও ১৭ মে, দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলন চলবে।
মতামত