শিক্ষাঙ্গন

ঢাবি ভিসি ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

প্রিন্ট
ঢাবি ভিসি ও প্রক্টরের পদত্যাগের দাবিতে ছাত্রদলের বিক্ষোভ

ছবি : সংগৃহীত


প্রকাশিত : ১৪ মে ২০২৫, দুপুর ২:০৯

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা শাহরিয়ার আলম সাম্যের খুনের দ্বায় প্রশাসনকে দিয়ে উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমদ খান ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদের পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।


বুধবার (১৪ মে) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ভিসির বাসভবনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশ পদত্যাগ দাবি করে ছাত্রদল।

এ সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সভাপতি গণেশ চন্দ্র রায় সাহস বলেন, ৫ আগস্ট-পরবর্তী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের যে প্রশাসন নিয়োগ দেওয়া হয়েছিল, আমরা ভেবেছিলাম নতুন বাংলাদেশে শিক্ষার্থীরা তাদের অধিকার ফিরে পাবে। কিন্তু আমরা কী দেখলাম? ফজলুল হক হলে একজনকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বাসে হামলা করা হয়েছে। চারুকলায় মোড়াল পুড়িয়ে ফেলা হলো। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ নেয়নি।

তিনি আরও বলেন, আগামী কয়েক ঘণ্টার মধ্যে যদি কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ না দেখি, ভিসি ও প্রক্টরকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করব। দ্রুত পদক্ষেপ না নিয়ে ভিসি ও প্রক্টরকে পদত্যাগ করতে হবে।

সমাবেশে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন নাসির বলেন, গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টায় সাম্যকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, এ ঘটনা প্রমাণিত হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আর নিরাপদ নয়। এর আগেও মানসিক ভারসাম্যহীন তোফাজ্জলকে কীভাবে হত্যা করা হয়েছে আমরা দেখেছি।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে চরমভাবে ব্যর্থ দাবি করে তিনি বলেন, প্রক্টর শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। তার পদত্যাগ দাবি করছি। এক‌ই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের অভিভাবক হিসেবে উপাচার্যও দায় এড়াতে পারেন না। তাই তারও পদত্যাগ দাবি করছি। গতকাল উপাচার্য শিক্ষার্থীদের সঙ্গে অশোভন আচরণ করেছেন। তাই আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাচ্ছি।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেও এর দায় দিয়ে নাসির উদ্দিন বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার‌ও আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা পদত্যাগ দাবি করছি। অনতিবিলম্বে সাম্যের হত্যার বিচার দাবি করছি। প্রতিটি হল থেকে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা গ্ৰেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনেও আওয়ামী লীগের অনেক দোসর রয়েছে। তাদের দ্রুত গ্ৰেপ্তারের দাবি জানাচ্ছি।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, গতকাল মঙ্গলবার রাত ১২টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এলাকায় শিক্ষার্থী সাম্যকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল রাত থেকে এখন পর্যন্ত ভিসি ও প্রক্টরের কাছ থেকে কোনো ধরনের স্পষ্ট বিবৃতি আমরা পাইনি।

তিনি বলেন, এই প্রশাসন দায়িত্ব ছিল সাধারণ শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার নিশ্চিত করা ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের বিচার করা। কিন্তু এ ব্যাপারে তাদের কোনো স্পষ্ট অবস্থান আমরা দেখতে পাইনি। আমাদের মনে হয় তাদের দ্বারা কখনো সাম্য হত্যা বিচার করা সম্ভব না।

উপাচার্য ড. নিয়াজ আহমদ খান ও প্রক্টর সহযোগী অধ্যাপক সাইফুদ্দীন আহমদের পদত্যাগ দাবি করে রাকিব বলেন, আমরা আন্দোলনের মাধ্যমে আমরা আমাদের দাবি আদায় করব। শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে যে পদত্যাগের দাবি জানানো হয়েছে আমরা আশা করব ভিসি ও প্রক্টর স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করবে। রাজপথে আমরা অবস্থান নিয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আমাদের দাবি আদায় করব।

হুঁশিয়ারি দিয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সভাপতি বলেন, আগামীতে ঢাকাসহ সারা বাংলাদেশ একজন ছাত্রদল নেতা যদি হামলার শিকার হয়, তাহলে আমরা সেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকাররের পদত্যাগ দাবি করব।