জাতীয়

সাবেক এমপি মমতাজ ৪ দিনের রিমান্ডে

প্রিন্ট
সাবেক এমপি মমতাজ ৪ দিনের রিমান্ডে

ছবি : সংগৃহীত


প্রকাশিত : ১৩ মে ২০২৫, বিকাল ৪:৩২

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কেন্দ্রিক রাজধানীর মিরপুর মডেল থানার হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও কণ্ঠশিল্পী মমতাজ বেগমের ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।


মঙ্গলবার (১৩ মে) দুপুর ২টা ১৭ মিনিটে তাকে আদালতে আনা হয়। এসময় তাকে সিএমএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়েছে। পরে বিকেল ৩টার দিকে তাকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. জুয়েল রানার আদালতে তোলা হয়। এরপর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মিরপুর মডেল থানার উপপরিদর্শক মনিরুল ইসলাম তাকে সাত দিনের রিমান্ডে চেয়ে আবেদন করেছেন। রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের জোর দাবি জানান। এসময় আসামিপক্ষ থেকে জামিন চাওয়া হয়। শুনানি শেষে আদালত আসামির ৪ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার রাত পৌনে ১২টায় রাজধানীর ধানমন্ডি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, যখন মমতাজ গান গাইতেন তখন তাকে সব দলমতের মানুষ পছন্দ করত। কিন্তু মানুষের সেই ভালোবাসাকে কাজে লাগিয়ে গানকে ব্যবহার করে মমতাজ বেগম স্বৈরাচার শেখ হাসিনাকে সহায়তা করেছেন। সিংগাইর এলাকার মানুষজন খুবই সহজ সরল। তাদের ভোটাধিকার কেড়ে নেয় মমতাজ বেগম। আমাদের পার্লামেন্টে এক মিনিটে খরচ হয় কয়েক কোটি টাকা। কিন্তু তিনি সেই পার্লামেন্টে শেখ হাসিনাকে নিয়ে গান গাইতেন। তিনি গানে বলেন, শেখ হাসিনার মতো নেত্রী বিশ্বে নাই। এসময় সবাই শেম শেম বলতে থাকেন।

এসময় রাষ্ট্রপক্ষ আরও বলেন, মমতাজ আরও বলেন, খালেদা জিয়ার বাবার নাম নাকি তিনি জানেন না। এটা কেমন কথা। দেশের স্বাধীনতার ঘোষক জিয়াউর রহমানকে নিয়েও তুচ্ছ তাচ্ছিল্য করেন এই মমতাজ। ফ্যাসিস্ট হাসিনাকে মমতাজদের মতো শিল্পীরা কেউ গান গেয়ে, কেউ ক্রিকেট খেলে, কেউ কবিতা লিখে, কেউ অভিনয় করে উজ্জীবিত করেছে। শেখ হাসিনার যখন মন খারাপ থাকতো, অবসর সময় কাটাতো তখন মমতাজ তাকে গান শুনাতো। হাসিনা ফ্যাসিজমকে দেশে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য মমতাজদের মতো শিল্পীদের ব্যবহার করেছে। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে মমতাজরা শেখ হাসিনাকে উজ্জীবিত করেছে, অর্থ সহায়তা দিয়েছে। তাকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর প্রার্থনা করছি।

মামলার সূত্রে জানা গেছে, গত ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ নং গোল চত্বর এলাকায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন মো. সাগর। ওইদিন বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে আসামিরা আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা ও গুলিবর্ষণ করেন। এসময় ভুক্তভোগী সাগরের বুকে গুলি লেগে পেছন দিকে বের হয়ে যায়। তার মা মোসা. বিউটি আক্তার তাকে খুঁজতে থাকে। একপর্যায়ে ওইদিন দিবাগত রাত ৩টায় মিরপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তার লাশের সন্ধান পান তিনি। পরে সন্তানের লাশ গ্রহণ করে গ্রামের বাড়িতে দাফন সম্পন্ন করেন।

এ ঘটনায় গত ২৭ নভেম্বর নিহতের মা মোসা. বিউটি আক্তার বাদী হয়ে মিরপুর মডেল থানায় মামলা করেন। এতে শেখ হাসিনাসহ ২৪৩ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। এছাড়া মামলায় ২৫০-৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়। এ মামলায় মমতাজ বেগম ৪৯ নং এজাহারনামীয় আসামি।