জাতীয়

৯ মাসে অন্তত পাঁচবার হামলার শিকার হাসনাত

প্রিন্ট
৯ মাসে অন্তত পাঁচবার হামলার শিকার হাসনাত

ছবি : ফাইল ছবি


প্রকাশিত : ৫ মে ২০২৫, সকাল ১০:০১

রাজধানী ঢাকায় ফেরার পথে গাজীপুরের চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় হামলায় আহত হয়েছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সংগঠক (দক্ষিণাঞ্চল) হাসনাত আব্দুল্লাহ। রবিবার (৪ মে) রাতে এ হামলার শিকার হন তিনি। গত বছরের জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের পর এ নিয়ে অন্তত পাঁচবার হামলার শিকার হলেন তিনি। অভ্যুত্থানের অন্যতম সমন্বয়কের ওপর সর্বশেষ হামলার ঘটনায় জড়িত হিসেবে নাম এসেছে আওয়ামী লীগের অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের।


গাজীপুরে হামলায় ১০-১২ জন

গাজীপুরে ১০-১২ জন যুবক মোটরসাইকেলে এসে রবিবার রাতে হাসনাতের গাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। এতে তিনি আহত হওয়ার পর তার রক্তাক্ত হাতের কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তার গাড়ির কাচ ভেঙে যায়। এ হামলার প্রতিবাদে গাজীপুর মহানগরীর পাশাপাশি ঢাকাসহ দেশে বিভিন্ন এলাকায় শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেছেন।

এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর গাড়িতে হামলার ঘটনায় দু’জনকে আটক করেছে গাজীপুর মেট্রোপলিটন পুলিশ (জিএমপি)। রবিবার রাতেই তাদেরকে আটক করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন জিএমপির উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) রবিউল হাসান। তারা হলেন—মহানগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগ নেতা মো. নিজাম উদ্দিন এবং কাশিমপুর থানা শেখ রাসেল শিশু কিশোর পরিষদের সভাপতি মাসুম আহসেদ দিপু।

ডিসি বলেন, ঘটনার পরপরই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং তাৎক্ষণিক অভিযানের নির্দেশ দেন। অভিযানে দ্রুত পদক্ষেপ নিয়ে দুই সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। হামলার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট অন্যদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে বলে জানান ডিসি রবিউল।

চট্টগ্রামে গাড়িচাপার চেষ্টা

গত ২৭ নভেম্বর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে। চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে। শহীদ অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম আলিফের কবর জিয়ারত করে ফেরার পথে সন্ধ্যার দিকে মহাসড়কের চুনতি ইউনিয়নের হাজি রাস্তার মোড়ে তাদের গাড়িবহরে ট্রাকচাপা দেওয়ার চেষ্টা হয় বলে অভিযোগ ওঠে।

পুলিশ জানায়, সমন্বয়কদের বহরে থাকা একটি প্রাইভেটকারের সঙ্গে ট্রাকের ধাক্কা লাগে। এতে গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেউ আহত হননি। ঘটনার পর চালককে আটকসহ ট্রাকটি জব্দ করে পুলিশ। এর আগে আইনজীবী সাইফুল ইসলাম আলিফের দ্বিতীয় জানাজায় মহানগরের জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ মাঠে অংশ নেন হাসনাত আবদুল্লাহ এবং সারজিস আলম। দাফনের পর কবরও জিয়ারত করেন তারা।

সচিবালয়ে আনসারদের হামলা

গত ২৫ আগস্ট সচিবালয় এলাকায় আনসার সদস্যদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের সময় হামলায় গুরুতর আহত হন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তাকে প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) কয়েকদিন চিকিৎসা নেওয়ার পর সুস্থ হয়ে ওঠেন তিনি।

ঘটনার দিন দুই সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সারজিস আলমকে আটক রাখার খবরে সচিবালয়ে যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এ সময় আনসার সদস্যরা তাদের ধাওয়া করে কয়েকজনকে লাঠিপেটা করেন। পরে শিক্ষার্থীরা পাল্টা ধাওয়া ও মারধর করেন আনসার সদস্যদেরর। সেনাবাহিনী ও পুলিশ সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

একদিনে দুই দুর্ঘটনা

গত ২৮ নভেম্বর ২৪ ঘণ্টার ব্যবধানে দু’বার সড়কে দুর্ঘটনার শিকার হন হাসনাত আব্দুল্লাহ। এদিন তার গাড়ি দুর্ঘটনায় পড়লে তিনি আহত হন। একদিনে দুই ঘটনা সন্দেহজনক বলে জানিয়েছিলেন তিনি। রাজধানীর মাতুয়াইল ও গুলিস্তানে এ ঘটনা ঘটে।

জানা গেছে, মাতুয়াইলে হাসনাতের গাড়ির পেছনে আঘাত করে একটি ট্রাক। সেই ছবি ফেসবুকে পোস্ট করেন আরেক সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ। এ ঘটনাকে ‘হত্যাচেষ্টা’ বলে অভিযোগ করেন তিনি। আর গুলিস্তানে ধাক্কা দেয় একটি মিনি ট্রাক।