ছবি : ঢাকা ইনসাইটস
রোহিঙ্গা সংকটের দীর্ঘস্থায়ী ও সম্মানজনক সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও কৌশলগত কূটনৈতিক পদক্ষেপের ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। “শরণার্থী সংকট নিরসন নিয়ে ভাবনা: উত্তর-উপনিবেশবাদ প্রেক্ষিতে রোহিঙ্গাদের দৃষ্টিভঙ্গির বিশ্লেষণ” শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এ অভিমত ব্যক্ত করেন।
রবিবার (৪ মে) সকাল ১১টায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সৈয়দ ইসমাইল হোসেন সিরাজী ভবনে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক (আইআর) বিভাগের আয়োজিত সেমিনারে এসব বিষয়ে আলোচনা করা হয়।
সেমিনারে প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকাস্থ সিমেক ইন্সটিটিউট অব টেকনোলজির আন্তর্জাতিক গবেষণা কেন্দ্রের সমন্বয়ক ড. শরিফুল ইসলাম। তিনি বলেন, “রোহিঙ্গা শরণার্থীরা তাদের নিজ দেশে—মিয়ানমারে—ফিরতে চান, তবে সেটি হতে হবে নৃতাত্ত্বিক পরিচয়ের স্বীকৃতি ও নাগরিক অধিকার নিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর। শুধু রাষ্ট্রের যেকোনো স্থানে ফেরত পাঠানো নয়, বরং নিজ জন্মভূমিতে ফেরার অধিকার তারা চান।”
তিনি আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের জন্য সম্মানজনক প্রত্যাবর্তন মানে শুধুমাত্র শারীরিকভাবে ফেরত যাওয়া নয়, বরং তাদের বসতবাড়ি ও পরিচয় ফিরে পাওয়া। প্রচলিত প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া তাদের বাস্তব দাবিকে উপেক্ষা করে।
রাখাইন রাজ্যে আরাকান আর্মি ও মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সংঘাত রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনকে জটিল করে তুলেছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশ সরকারের উচিত হবে কৌশলগতভাবে মিয়ানমারের জান্তা সরকার, আরাকান আর্মি এবং চীনের সমর্থন আদায়ে কার্যকর কূটনৈতিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।
রাখাইনে মানবিক করিডর গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন ড. ইসলাম। তিনি বলেন, “বাংলাদেশ সরকারের উচিত সর্বদলীয় বৈঠকের মাধ্যমে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া। তবে এতে দেশের সার্বভৌমত্ব ও নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয়, সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, মানবিক করিডর বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, মিয়ানমার সরকার ও আরাকান আর্মির কাছ থেকে প্রত্যাবাসনের প্রতিশ্রুতি আদায় করাও জরুরি।
মতামত