ছবি : ফাইল ছবি
নোয়াখালীতে কিশোর গ্যাংয়ের হামলার শিকার শহীদ রিজভীর ছোট ভাই রিমন সংক্রান্ত একটি মামলায় নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (নোবিপ্রবি) এপ্লাইড কেমিস্ট্রি এন্ড কেমিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং (এসিসিই) বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের স্নাতকোত্তর শিক্ষার্থী মো. জিহান উদ্দিনকে আসামি করা হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জিহান এবং তার পরিবার এই মামলাটিকে মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।
তাদের অভিযোগ, জুলাই মাসের আন্দোলন এবং শহীদ পরিবারকে পুঁজি করে একটি মহল এই মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।
মামলার তথ্য মতে, জুলাই আন্দোলনের শহীদ মাহমুদুল হাসান রিজভীর ছোট ভাই শাহরিয়ার হাসান রিমন (১৬) ২৭ এপ্রিল (রোববার) বিকেলে সাড়ে ৪ টার দিকে নোয়াখালী সদর উপজেলার মাইজদী শহরের বার্লিংটন মোড়ে দুষ্কৃতকারীদের ছুরিকাঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হন।
এদিকে ২৮ এপ্রিল ভুক্তভোগীর মা সুধারাম থানায় ২৪ জনের নাম পরিচয়সহ এবং ১০/১৫ অজ্ঞাতনামা আসামীর বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলা নম্বর ৪৫- তারিখ ২৮/৪/২০২৫। যেখানে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জিহান উদ্দিনকে ১৯ নম্বর আসামী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
জিহানের পরিবারের দাবি, ঘটনার আগের দিন থেকে জিহান নোয়াখালী শহরের বাইরে ছিল। লক্ষীপুরে বোনের বাসায় অবস্থান করছিল। যার কারণে এই মামলা জিহানের বিরুদ্ধে এক গভীর ষড়যন্ত্র বলে মন্তব্য করেন তাদের পরিবার।
জিহান নোয়াখালীর একটা স্বেচ্ছাসেবক সংগঠনের দায়িত্বপ্রাপ্ত। মূলত সংগঠনকে প্রশ্নবিদ্ধ করার উদ্দেশ্যে এমন মিথ্যা মামলার শিকার হয়েছে বলে জানা যায়।
জিহান উদ্দিন তার আত্মপক্ষ সমর্থনে সাংবাদিককে জানান, ঘটনার সময় আমি এই শহরে ছিলাম না এবং কোনোভাবেই এই ঘটনার সাথে যুক্ত নই। একটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মহল আমাকে এবং আমার সংগঠনের একজন সদস্যকে, যিনি কিনা ঢাকায় অবস্থান করছিলেন, মিথ্যা মামলায় জড়িয়েছে। তারা ব্যক্তিগতভাবে আমাকে এবং আমার সংগঠনের সুনাম ক্ষুণ্ণ করতে চাইছে।" তিনি আরও বলেন, "আহত রিমনকে আমি চিনি না এবং জানার কথাও না। বৈষম্যবিরোধীর একটি অংশ মামলায় সহযোগিতা করতে গিয়ে মামুনুর রহমান তুষার ও ইয়াছিন আরাফাতসহ কয়েকজন আমার নাম যুক্ত করে দিয়েছে, যেখানে ঘটনার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই।" জিহান সিসিটিভি ফুটেজ দেখে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি এবং তাকে মিথ্যা মামলায় জড়ানোর চেষ্টাকারীদের মুখোশ উন্মোচন করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান।
জিহানের বড় বোন তানজিনা বেগম জানান,গত ২৭শে এপ্রিল তার এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ের পদার্থ বিজ্ঞান পরীক্ষা ছিল। সেই কারণে তার ছোট ভাই রিমন তাদের বাসায় মেয়েকে পড়াতে এসেছিল। পরীক্ষা শেষে ২৮শে এপ্রিল সকালে রিমন বাড়ি ফিরে যায়।
এই মামলার বিষয়ে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরকে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনি জানান, তারা এখনো জিহানের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি জানেন না। তবে খুব শীঘ্রই তারা এই মামলার খোঁজখবর নেবেন।
মামলার বিষয়ে এসিসিই বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. আশরাফুল আলমকে জিজ্ঞেস করা হলে, তিনিও কিছু জানেন না বলে মন্তব্য করেন।
মামলার তদন্তকারী পুলিশ অফিসা সুধন চন্দ্র দাস জানান, আমাদের তদন্ত চলমান আছে। তবে তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী যারা দোষী শুধু তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে। সিসিটিভি ফুটেজ সহ বিভিন্ন তথ্য মতে যারা নির্দোষ থাকবে, তাদের এরেস্টও করা হবেনা।
প্রসঙ্গত, জিহান উদ্দিন নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের এসিসিই বিভাগের স্নাতকোত্তর ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের একজন শিক্ষার্থী।
মতামত