শিক্ষাঙ্গন

গাজীপুরে রঈস উদ্দিন হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে কুবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

প্রিন্ট
গাজীপুরে রঈস উদ্দিন হত্যাকান্ডের প্রতিবাদে কুবি শিক্ষার্থীদের মানববন্ধন

ছবি : ছবি: ঢাকা ইনসাইটস


প্রকাশিত : ৩ মে ২০২৫, দুপুর ১২:২১

গাজীপুরে মব ভায়োলেন্স ও পুলিশ কাস্টোডিতে মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন করেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) সাধারণ শিক্ষার্থীরা।


শুক্রবার ( ২ মে) জুম্মাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের গোলচত্বরে এ মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এর আগে কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়।


‘আমার ভাই কবরে,খুনী কেন বাহিরে’, প্রশাসন জবাব চাই, প্রশাসন জবাব চাই’ ‘নারায়ে তাকবির আল্লাহু আকবার’—ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।


এ সময় ফার্মেসি বিভাগের ১৫ আবর্তনের নাঈম আহমেদ, ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের আমজাদ হোসেন, অর্থনীতি বিভাগের আবরার, ইংরেজি বিভাগের রায়হানসহ অনেকে বক্তব্য প্রদান করেন। তারা মাওলানা রঈস উদ্দিন হত্যার সাথে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।


ব্যবস্থাপনা শিক্ষা বিভাগের আমজাদ হোসেন বলেন, “৫ আগস্টের পর আমরা ভেবেছিলাম, একটি বৈষম্যহীন রাষ্ট্র গঠিত হবে কিন্তু বাস্তবে তার বিপরীত চিত্র দেখছি। গত ২৭ তারিখে গাজীপুরে মাওলানা রইস উদ্দিনকে যেভাবে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে, সেখানে একটি নির্দিষ্ট গোষ্ঠীসহ প্রশাসনেরও সম্পৃক্ততা ছিল। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে যদি জড়িতদের আইনের আওতায় না আনা হয়, তাহলে আমাদের কর্মসূচি আরও জোরালো হবে।”


অর্থনীতি বিভাগের আবরার বলেন, “একজন মসজিদের ইমামের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অত্যন্ত বেদনাদায়ক ও কষ্টদায়ক। এমন নির্মম আচরণ সচরাচর দেখা যায় না। তাকে যেভাবে হত্যা করা হয়েছে, ইসলাম কখনোই তা মেনে নেবে না। মব জাস্টিস ও গুন্ডাগিরির মাধ্যমে কখনোই সুষ্ঠু বিচার সম্ভব নয়। সরকারের কাছে আমরা জোর দাবি জানাই—অপরাধীদের চিহ্নিত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনা হোক।”


ইংরেজি বিভাগের ১৩তম আবর্তনের রায়হান বলেন, “গত ২৭ এপ্রিল আমার ভাই মোহাম্মদ রইস উদ্দিনকে নির্মমভাবে হত্যা করে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়, কিন্তু পুলিশ তাকে জেলে পাঠিয়ে দেয়। এত প্রমাণ থাকার পরও পুলিশসহ যারা জড়িত ছিল, তাদের এখনো গ্রেপ্তার করা হয়নি। এই মানববন্ধন থেকে আমরা জানতে চাই—জড়িতদের দ্রুত গ্রেপ্তার করা হবে কি না।”


মানববন্ধনের বক্তারা আরও বলেন, ‘বিভিন্নভাবে বিভিন্ন মানুষকে মব করে হত্যা করা হয়েছে। আমরা দেখেছি, স্বৈরাচার আমলে যেভাবে হুজুরদের হত্যা করা হয়েছে, এখনো একইভাবে হত্যাকাণ্ড চালানো হচ্ছে। আমরা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে জানিয়ে দিতে চাই—যদি কেউ মব ভায়োলেন্সের চেষ্টা করে, তাদের প্রতিহত করুন। যদি তা না পারেন, তাহলে আপনাদের সরকারে থাকার প্রয়োজন নেই। কোনো মুসলিম ভাইয়ের উপর মব ভায়োলেন্স হলে আমরা তা কখনোই মেনে নেব না। আমরা প্রশাসনকে স্পষ্ট করে জানাতে চাই—যতসব মব লিঞ্চিং ঘটছে, আপনারা তা বন্ধ করুন। যদি রইস উদ্দীনের মতো কেউ আবার আক্রমণের শিকার হন, তাহলে আমরা গত ৫ আগস্ট যেভাবে শেখ হাসিনাকে হটিয়েছিলাম, ঠিক সেভাবেই অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে হঠাতে দ্বিধা করব না।”


সর্বশেষ মাওলানা রঈস উদ্দিনের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মুনাজাতের মাধ্যমে মানববন্ধন শেষ করেন সাইদুর রহমান।