ছবি : সংগৃহীত
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারত নিয়ন্ত্রিত জম্মু-কাশ্মীরের পারগওয়াল সেক্টরে আন্তর্জাতিক সীমান্ত পেরিয়ে গুলি চালিয়েছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। লাইন অব কন্ট্রোল (এলওসি) বরাবর টানা ষষ্ঠ দিন যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের এক দিন পর এ ঘটনা ঘটল। গতকাল মঙ্গলবার দিবাগত রাতে নওশেরা, সুন্দরবনি এবং আখনূর সেক্টরেও হালকা অস্ত্রের গুলি চালিয়েছে পাকিস্তান। জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে মারাত্মক সন্ত্রাসী হামলার পর ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারির পর এটি অন্যতম বড় যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন। ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামের বাইসারান উপত্যকায় সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হন। এই হামলা প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়ে তুলেছে।
এই হামলার জবাবে ভারত ১৯৬০ সালের সিন্ধু পানিবণ্টন চুক্তি স্থগিত করে। ২৭ এপ্রিল থেকে পাকিস্তানি নাগরিকদের ইস্যু করা সমস্ত ভিসা বাতিল করে দেয়। অবিলম্বে আটারি-ওয়াঘা স্থল ট্রানজিট পোস্ট বন্ধ করে দেওয়া হয়।
জম্মু-কাশ্মীরের পেহেলগামে সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর ভারত ও পাকিস্তানি সৈন্যদের মধ্যে গুলিবিনিময় শুরু হয়। ভারতের অভিযোগ, পাকিস্তানভিত্তিক লস্কর-ই-তৈয়্যবার সঙ্গে যুক্ত একটি সন্ত্রাসী গোষ্ঠী এই হামলায় জড়িত। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অঙ্গীকার করেছেন, ভারত এই মারাত্মক হামলার পেছনের প্রত্যেক সন্ত্রাসী এবং তাদের ‘পৃষ্ঠপোষকদের’ শনাক্ত করে খুঁজে বের করে শাস্তি দেবে।
পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী আতাউল্লাহ তারার বলেছেন, ভারত সরকার পেহেলগাম সন্ত্রাসী হামলায় পাকিস্তানের জড়িত থাকার ‘ভিত্তিহীন এবং মনগড়া অভিযোগের’ ভিত্তিতে হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে। তিনি বলেন, ভারত একাই একই সঙ্গে ‘বিচারক, জুরি ও জল্লাদের’ ভূমিকা পালন করছে। তিনি বলেন, ‘একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে পাকিস্তান আন্তরিকভাবে একটি নিরপেক্ষ বিশেষজ্ঞ কমিশন দ্বারা বিশ্বাসযোগ্য, স্বচ্ছ ও স্বাধীন তদন্তের প্রস্তাব দিয়েছে।’ তিনি বলেন, ইসলামাবাদ নিজেও সন্ত্রাসের শিকার।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস আলাদাভাবে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফের সঙ্গে কথা বলেছেন। তিনি পেহেলগাম হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। জাতিসংঘের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, মহাসচিব তাঁর ফোনকলে আইনানুগ উপায়ে হামলার বিচার ও জবাবদিহি অনুসরণ করার গুরুত্ব উল্লেখ করেছেন।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনায় জাতিসংঘের মহাসচিব গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি এমন সংঘাত এড়ানোর ওপর জোর দিয়েছেন, যা ভয়াবহ পরিণতির কারণ হতে পারে। উত্তেজনা কমাতে সহায়তার জন্য তিনি মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন।
মতামত