সারাদেশ

শব্দদূষণ হ্রাসে সম্মিলিত প্রচেষ্টা: মোহাম্মদপুরে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন

প্রিন্ট
শব্দদূষণ হ্রাসে সম্মিলিত প্রচেষ্টা: মোহাম্মদপুরে সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইন

ছবি : ঢাকা ইনসাইটস


প্রকাশিত : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, সন্ধ্যা ৮:১৬

শব্দ দূষণ একটি নীরব ঘাতক হিসেবে কাজ করছে, যা শিশু ও প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, অতিরিক্ত শব্দ শিশুদের শারীরিক ও মানসিক বিকাশে বাধা সৃষ্টি করতে পারে। শব্দদূষণের প্রধান উৎসের মধ্যে রয়েছে যানবাহনের হর্ন, ইটভাঙার মেশিন, জেনারেটর, কলকারখানা ও উচ্চ শব্দের বাদ্যযন্ত্র।

আজ মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল ২০২৫) সকাল ১১টায় ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে "শ্রবণ শক্তি রক্ষা কর, স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত কর" শীর্ষক একটি সচেতনতামূলক ক্যাম্পেইনের আয়োজন করা হয়। ঢাকা আইডিয়াল ক্যাডেট স্কুল, ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ (আইডাব্লিউবি) এবং ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ (ডাব্লিউবিবি) ট্রাস্টের সম্মিলিত উদ্যোগে এ কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হয়।

ক্যাম্পেইনে যানবাহন চালকদের মাঝে শব্দদূষণ সম্পর্কে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে লিফলেট বিতরণ করা হয়। বক্তারা বলেন, শব্দদূষণ (নিয়ন্ত্রণ) বিধিমালা ২০০৬ অনুযায়ী, হাসপাতাল, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, আদালত, প্রশাসনিক এলাকা ইত্যাদি 'নীরব এলাকা' হিসেবে ঘোষিত। তবে এসব এলাকায়ও নির্ধারিত মাত্রার দ্বিগুণ শব্দ উৎপন্ন হচ্ছে, যা উদ্বেগজনক।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, দিনের বেলায় ৫৫ ডেসিবেল ও রাতে ৪৫ ডেসিবেল শব্দ সহনীয়। অথচ ঢাকায় শব্দমাত্রা প্রায়ই ১২০ থেকে ১৩২ ডেসিবেল পর্যন্ত পৌঁছে যায়, যা স্বাস্থ্যের জন্য চরম ঝুঁকিপূর্ণ।

ওয়ার্ক ফর এ বেটার বাংলাদেশ ট্রাস্টের পৃষ্ঠপোষকতায় ইনস্টিটিউট অব ওয়েলবীইং বাংলাদেশ পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় শব্দদূষণের মাত্রা ক্রমেই বাড়ছে। প্রধান কারণ হিসেবে যানবাহনের অপ্রয়োজনীয় হর্ন, নির্মাণস্থলের যন্ত্রপাতির শব্দ, কলকারখানা ও অনুষ্ঠানস্থলের মাইক ব্যবহারের কথা উল্লেখ করা হয়।

বিশেষজ্ঞরা জানান, শব্দদূষণের ফলে মানসিক চাপ, ঘুমের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, স্নায়ুজনিত সমস্যা এমনকি শিশুর জন্মগত ত্রুটিও দেখা দিতে পারে। এর সবচেয়ে বড় ক্ষতি হলো শ্রবণশক্তির স্থায়ী ক্ষয়।

ক্যাম্পেইন থেকে অযথা হর্ন না বাজানো, ট্রাফিক জ্যামে হর্ন ব্যবহার না করা, নির্মাণকাজে শব্দদূষণ বিধিমালা মেনে চলা এবং প্রত্যেক নাগরিককে আইন অনুসরণ করার আহ্বান জানানো হয়।