ছবি : সংগৃহীত
বিশ্লেষকদের মতে, পাকিস্তানকে এই মিসাইল সরবরাহ করে যুদ্ধ পরিস্থিতিতে ইসলামাবাদকে শক্তিশালী করার ইঙ্গিত দিচ্ছে বেইজিং। সম্প্রতি তিনটি জেএফ-১৭ যুদ্ধবিমানের ছবি প্রকাশ করেছে পাকিস্তান বিমানবাহিনী, যেখানে প্রতিটি জেটই সজ্জিত ছিল পিএল-১৫ মিসাইলে। এই মিসাইল দৃষ্টিসীমার বাইরে (Beyond Visual Range) হামলা চালাতে সক্ষম, যার পাল্লা ২০০ থেকে ৩০০ কিলোমিটার এবং গতি শব্দের পাঁচ গুণেরও বেশি।
চীনের তৈরি এই ক্ষেপণাস্ত্র যদিও গতির দিক দিয়ে এগিয়ে, তবে ভারতীয় রাফাল জেটের সঙ্গে থাকা ইউরোপীয় ‘মিটিওর’ ক্ষেপণাস্ত্রকে অনেকেই বেশি কার্যকর বলে মনে করেন। র্যামজেট ইঞ্জিনচালিত মিটিওরের রয়েছে লক্ষ্যবস্তু ট্র্যাক করে পুনরায় আঘাত হানার সক্ষমতা, যা পিএল-১৫ থেকে অনেকটাই উন্নত।
ভারতের প্রতিরক্ষা কৌশলের অংশ হিসেবে শুধু মিটিওরের ওপর নির্ভর না করে রাশিয়ার তৈরি আর-৩৭এম ক্ষেপণাস্ত্র আমদানির পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইউক্রেন যুদ্ধেও সফলভাবে ব্যবহৃত এই ক্ষেপণাস্ত্রের পাল্লা এবং শক্তি পাকিস্তানের জন্য বড় হুমকি হয়ে উঠতে পারে। বর্তমানে ভারতের বিমানবাহিনীতে রয়েছে ২৬০টির বেশি রুশ নির্মিত এসইউ-৩০এমকেআই যুদ্ধবিমান, যেগুলি আর-৭৭ এবং ব্রহ্মস সুপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র বহনে সক্ষম। এছাড়া দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হালকা যুদ্ধবিমান ‘তেজস’-এ ডিআরডিওর ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহারে ভারতীয় বায়ুসেনা নিজের অবস্থান আরও মজবুত করছে।
সম্প্রতি পহেলগাঁও হামলার প্রতিক্রিয়ায় ‘অপারেশন আক্রমণ’ নামে মহড়া শুরু করেছে ভারতীয় বায়ুসেনা। ফ্রান্সের সঙ্গে ২৬টি রাফাল-এম যুদ্ধবিমান কেনার জন্য ৬৩ হাজার কোটি রুপির চুক্তিও করেছে নয়াদিল্লি।
অন্যদিকে, পাকিস্তান সরকার পহেলগাঁও হামলার জন্য ভারতীয় অভিযোগ খারিজ করে আন্তর্জাতিক তদন্তের দাবি তুলেছে। ইসলামাবাদের এ দাবিকে সমর্থন জানিয়েছে চীন। এমনকি সন্ত্রাসবাদ ইস্যুতে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া এবং ইউরোপীয় একাধিক দেশ ভারতের পাশে থাকার কথা জানিয়েছে।
এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠছে—দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ক্রমবর্ধমান সামরিক প্রস্তুতি কি সরাসরি সংঘর্ষে গড়াবে? বিশেষজ্ঞদের মতে, সামরিক কৌশল ও কূটনৈতিক চাপের মধ্যে দক্ষিণ এশিয়ার স্থিতিশীলতা এখন এক নতুন পরীক্ষার মুখে।
মতামত