জাতীয়

আমরা যেন আরেকটা গাজা না হই, রাখাইন করিডর নিয়ে সব দলের মতামত নেওয়া উচিত

প্রিন্ট
আমরা যেন আরেকটা গাজা না হই, রাখাইন করিডর নিয়ে সব দলের মতামত নেওয়া উচিত

ছবি : সংগৃহীত


প্রকাশিত : ২৯ এপ্রিল ২০২৫, সকাল ১০:৩৯

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে সহায়তা পাঠাতে বাংলাদেশের মাধ্যমে একটি মানবিক করিডোর গঠনের জাতিসংঘের প্রস্তাবে সম্মত হওয়ার আগে সরকারকে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা করা উচিত ছিল।


সোমবার (২৮ এপ্রিল) ঠাকুরগাঁওয়ে এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেন, “আমরা আরেকটি গাজা হতে চাই না… আমরা আরেকটি যুদ্ধে জড়াতে চাই না। আমাদের দেশে আর কেউ এসে যেন নতুন কোনো সমস্যা সৃষ্টি করতে না পারে। রোহিঙ্গা সমস্যা নিয়ে আমরা ইতিমধ্যেই বিপদে রয়েছি। তাই আমরা মনে করি, এই সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে আলোচনার দরকার ছিল।”

তিনি বলেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা এই সিদ্ধান্তের সঙ্গে জড়িত। ফখরুলের এই মন্তব্য আসে একদিন পর, যখন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন বলেন, রাখাইনে সহায়তা পাঠাতে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে একটি মানবিক করিডোর স্থাপনের জাতিসংঘের প্রস্তাবে বাংলাদেশ নীতিগতভাবে সম্মত হয়েছে, তবে কিছু শর্ত সাপেক্ষে।

তিনি বলেন, “জাতিসংঘের প্রস্তাব অনুযায়ী বাংলাদেশ নীতিগতভাবে একটি মানবিক করিডোর মঞ্জুর করেছে। এটি কেবল মানবিক সহায়তার জন্য ব্যবহৃত হবে। তবে আমাদের কিছু শর্ত রয়েছে। বিস্তারিত বলা যাচ্ছে না। শর্তগুলো পূরণ হলে আমরা সহায়তা করব।” মির্জা ফখরুল আরও বলেন, “রাখাইন সরাসরি প্রবেশ করা সম্ভব না হওয়ায় এখন বাংলাদেশের চট্টগ্রাম অঞ্চলের মাধ্যমে সেখানে পৌঁছানো সম্ভব হচ্ছে। সরকার এখন একটি মানবিক করিডোর দিচ্ছে।”

তিনি গাজার প্রসঙ্গ টেনে বলেন, “গাজায় কি যুদ্ধ চলছে না? ইসরায়েল প্রতিনিয়ত গাজায় বোমাবর্ষণ করছে। কেউ সেখানে যেতে পারছে না। জাতিসংঘ খাবার, ওষুধ পাঠাতে জর্ডান বা মিশরের মধ্য দিয়ে রুট তৈরি করছে। এটা মানবিক কারণে প্রয়োজন। কিন্তু আমার প্রশ্ন—বাংলাদেশ কেন এমন একটি পর্যায়ে গেল যেখানে এখন মানবিক করিডোর দিতে হচ্ছে? এটি একটি বড় সিদ্ধান্ত।”

তিনি বলেন, এই ধরনের সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে জনগণের মতামত এবং রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ জরুরি ছিল। “আমরা মানুষকে সাহায্য করায় কোনো আপত্তি রাখি না। জাতিসংঘের উদ্যোগেও আপত্তি নেই। কিন্তু এটা সবার মতামতের ভিত্তিতে হতে হবে,” বলেন ফখরুল। নির্বাচন ও সংস্কারের বিষয়ে তিনি বলেন, “আগের শাসনব্যবস্থায় দুর্নীতির সুযোগ ছিল। প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা রাজাসুলভ হয়ে পড়েছিল। তাই আমরা ৩১ দফা সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি।”

তিনি আরও বলেন, “আমরা সংস্কার চাই। কিন্তু আমরা একইসঙ্গে নির্বাচনেরও দাবি জানাচ্ছি। সরকার যেন শুভবুদ্ধির পরিচয় দেয়, আমরা তা আশা করি। “তারা বলছে, ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন করতে চায়। আমরা বলি—অনিশ্চিত কথা না বলে নির্দিষ্ট সময়সীমা দিন। একটি রোডম্যাপ দিন,” বলেন মির্জা ফখরুল।