ছবি : ঢাকা ইনসাইটস
ভালুকা উপজেলার উথুরা ইউনিয়নের কৈয়াদী গ্রামের তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সুমন আহমেদ স্থানীয় কৃষিতে নতুন সম্ভাবনার সৃষ্টি করেছেন। অনার্স তৃতীয় বর্ষের এই ছাত্র প্রায় ৭ শতক জমিতে ১৩ জাতের উন্নত মানের আঙ্গুর চাষ করে সাফল্য পেয়েছেন, যা স্থানীয় কৃষিতে নতুন দিগন্তের সূচনা করতে পারে।
সুমন আহমেদ শুধু একজন সাধারণ ছাত্র নন, তিনি একজন স্বপ্নবাজ তরুণ যিনি কৃষিকে বেছে নিয়েছেন নিজের ভবিষ্যৎ গড়ার হাতিয়ার হিসেবে। তিনি দেশ-বিদেশের বিভিন্ন উন্নত জাতের আঙ্গুর সংগ্রহ করে নিজ এলাকায় চাষাবাদ শুরু করেন। তার বাগানে চাষকৃত আঙ্গুরের জাতগুলোর মধ্যে রয়েছে বাইকুনর, একেলো, ভেলেজ, গ্রিন লং, আমেরিকান রিলায়েন্স, অস্ট্রেলিয়ান কিং, মাসকাট হুয়াইট, মার্সেল ফোর্স, থার্টি ওয়ান এবং জয় সিডলেজ।
গত বছরের তুলনায় এই বছর সুমনের আঙ্গুর চাষে উল্লেখযোগ্য ফলন হয়েছে। তিনি আশা করছেন, আগামীতেও ফলনের পরিমাণ আরও বাড়বে। সুমন বলেন, "দেশজুড়ে যদি এইভাবে উন্নত জাতের আঙ্গুরের চাষ বিস্তৃত করা যায়, তাহলে ভবিষ্যতে বিদেশ থেকে আঙ্গুর আমদানির প্রয়োজন নাও হতে পারে।"
সুমনের এই সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন কৈয়াদী ব্লকের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জাহিদ। তিনি সবসময় কৃষকদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করে যাচ্ছেন।
ভালুকা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা নুসরাত জামান বলেন, "সুমন পরীক্ষামূলকভাবে তার বাড়ির আঙিনায় আঙুর চাষ করেছে। সব দিক বিবেচনা করে দেখা যাচ্ছে ভালুকার মাটি ও আবহাওয়া আঙুর চাষের জন্য উপযুক্ত।"
কৃষি বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশের মাটি আঙ্গুরের জন্য উপযুক্ত। পরিমিত মাত্রায় সার ও যথাযথ পরিচর্যার মাধ্যমে একটি আঙ্গুর গাছ বছরের পর বছর ধরে ফলন দিতে পারে। বাংলাদেশে অক্টোবর-নভেম্বর মাসে আঙ্গুর গাছ ছাটাই করলে মার্চ-এপ্রিলে ফল পাওয়া যায়। আঙ্গুর পাকার সময় বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলে পলিথিন জাতীয় কাগজ দিয়ে গাছ ঢেকে দিতে হয়, কারণ বৃষ্টির পানি লাগলে আঙ্গুর ফেটে যাবার সম্ভাবনা থাকে।
সুমন তার বাগানকে আরও সম্প্রসারিত করতে চান এবং আধুনিক পদ্ধতিতে আঙ্গুর চাষের প্রসার ঘটাতে চান। তার লক্ষ্য স্থানীয় বাজারে উচ্চমানের আঙ্গুর সরবরাহ করে বিদেশি ফল আমদানির পরিমাণ কমানো। এলাকার অন্যান্য কৃষকরাও এখন সুমনের সাফল্যে উৎসাহিত হচ্ছেন এবং আঙ্গুর চাষে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।
মতামত