লালমনিরহাটের আদিতমারীতে এক গৃহবধূ (২০) এর লাশ উদ্ধার হয়েছে। রোববার (৬ এপ্রিল) এ গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়।
তাঁর পরিবারের দাবি, পারিবারিক বিরোধের জেরে এআই দিয়ে স্বামীর স্বজনের বানানো আপত্তিকর ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় মানসিক যন্ত্রণায় তিনি আত্মহত্যা করেছেন।
ওই গৃহবধূর স্বামী (২৮) জাপান প্রবাসী। ১০ মাস আগে তাঁদের বিয়ে হয়। গৃহবধূরও স্বামীর কাছে জাপানে যাওয়ার কথা ছিল।
পুলিশ বাড়ির শোবার ঘর থেকে ঝুলন্ত অবস্থায় গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করে। একটি সুইসাইড নোটও উদ্ধার করা হয়। সেখানে গৃহবধূ তাঁর স্বামীর পর্তুগাল প্রবাসী এক স্বজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
গৃহবধূর ভাই অভিযোগ করেন, এআই প্রযুক্তি দিয়ে তাঁর বোনের আপত্তিকর ভিডিও বানানো হয়েছিল। এটি বানানো ও আত্মীয়-স্বজনের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজটি স্বামীর স্বজন করেছেন বলে বোন তাঁদের বলেছিলেন। সুইসাইড নোটেও তাঁর নাম লিখে গেছেন। তাঁরা বোনকে বোঝানোর চেষ্টা করেছেন, কিন্তু মানসিকভাবে তিনি বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছিলেন। যন্ত্রণা সইতে না পেরে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন বোন।
গৃহবধূর স্বজনদের অভিযোগ, জাপান প্রবাসীর সঙ্গে বিয়ে মেনে নিতে পারেননি ওই স্বজন। এক পর্যায়ে এটি পারিবারিক বিরোধে রূপ নেয়। পরে আপত্তিকর ভিডিও বানিয়ে একটি ভুয়া আইডি থেকে সেটি স্বজনদের কাছে পাঠানো হয়।
বক্তব্য জানার জন্য গৃহবধূর জাপান প্রবাসী স্বামীর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি তাঁর স্বজনকে অভিযুক্ত করেন। স্ত্রীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগ করে তিনি তাঁর স্বজনের বিচার দাবি করেন।
এসব অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানতে পর্তুগাল প্রবাসীর সঙ্গে বুধবার সন্ধ্যায় যোগাযোগ করা হয়। তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন। তাঁর দাবি, তাঁর জাপান প্রবাসী স্বজনের সঙ্গে অন্য মেয়ের সম্পর্ক আছে। সে কারণে এই মেয়েকে (মৃত গৃহবধূ) তিনি বিয়ে করতে চাননি। পরিবারের চাপে পড়ে বিয়ে করেছিলেন। বিয়ের দেনমোহরের ১০লক্ষ টাকা না দিতে জাপান প্রবাসী এই নাটক করেছেন। আপত্তিকর ভিডিওর বিষয়ে তাঁর ভাষ্য, তাঁর আইডিতে ৭মিনিট ৪সেকেন্ডের একটি ভিডিও আসে। তিনি সেটা তাঁর স্ত্রীকে দেখান। ভিডিওটি নিয়ে তাঁর জাপান প্রবাসী স্বজন ও পরিবারের লোকজন গৃহবধূকে মানসিক নির্যাতন করেছেন।
আদিতমারী থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আলী আকবর বলেন, লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের মর্গে সোমবার গৃহবধূর ময়না তদন্ত হয়। পরে লাশ পরিবারের সদস্যদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ বিষয়ে পরিবারকে মামলা করতে বলা হয়েছে।
গৃহবধূর ভাই বলেন, বোনকে আত্মহত্যার প্ররোচনা দেওয়া ও আপত্তিকর ভিডিও তৈরি করে পাঠানোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট আইনে মামলা করবেন তাঁরা। তাঁদের কাছে সব তথ্য-প্রমাণ আছে।
মতামত