সারাদেশ

লালমনিরহাটে ১৬ বছর সংসার করে প্রেমের টানে ঘর ছাড়লেন স্ত্রী!

প্রিন্ট
লালমনিরহাটে ১৬ বছর সংসার করে প্রেমের টানে ঘর ছাড়লেন স্ত্রী!

প্রকাশিত : ৯ এপ্রিল ২০২৫, সন্ধ্যা ৮:০৫

 লালমনিরহাট সদর থানা এলাকার এক গৃহবধূ হঠাৎ করে বাড়ি থেকে উধাও হয়ে যান। পরে পরিবারের লোকজন জানতে পারেন প্রেমিকের হাত ধরে তিনি চম্পট দিয়েছেন। ১৬ বছর দাম্পত্য জীবনের পরও এ গৃহবধূ ঘর ছেড়েছেন। পরিবারের লোকজন থানায় এসে অভিযোগ করলেও সমাধান মেলেনি।

শনিবার (৫ এপ্রিল) লালমনিরহাট সদর থানার মোগলহাট ইউনিয়নের কোদালখাতা এলাকায় এমন ঘটনা ঘটে।

রোববার ও সোমবার (৬ ও ৭ এপ্রিল) লালমনিরহাট সদর থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবরে কোদালখাতা গ্রামের মোঃ ইসরাইল হোসেন এ অভিযোগ করেছেন।

লালমনিরহাট সদর থানার লিখিত অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, আমি মোঃ ইসরাইল হোসেন (৬৪), পিতা মৃত: আহাম্মদ আলী, সাং- কোদালখাতা, ওয়ার্ড নং-৯, ইউনিয়ন: মোগলহাট, থানা ও জেলা: লালমনিরহাট। থানায় উপস্থিত হইয়া এই মর্মে অভিযোগ করিতেছি যে, আমার বসতবাড়ির সাথে পাকা রাস্তা সংলগ্ন স্থানে চায়ের দোকান দিয়া দীর্ঘদিন হইতে ব্যবসা করিয়া আসিতেছি। এমতাবস্থায় আমার প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর প্রায় ১৬ বছর পূর্বে মোছাঃ সুপালী বেগম (৪০), পিতা মৃত: নাইয়া জব্বার, মাতা: মোছাঃ তছিরন বেগম, সাং- পুটিমারী, আবাসন প্রকল্প, থানা: চিলমারী, জেলা: কুড়িগ্রাম কে দ্বিতীয় বিবাহ করিয়া ঘর সংসার করাকালীন ১টি মেয়ে মোছাঃ ঈশামনি খাতুন (৪) এর পিতা হই। আমার বাড়ির পার্শে চায়ের দোকান হওয়ায় প্রায় সময় আমি ও আমার স্ত্রীসহ চায়ের দোকান ব্যবসা করিয়া আসিতেছি। আমার উক্ত দ্বিতীয় স্ত্রী সুপালী বেগম প্রায় সময় তার পিত্রালয়ে চলিয়া গেলে সহজে আসতে চায় না। পরে অনেক লোকজানের সহায়তায় আমার স্ত্রীকে বাড়িতে নিয়ে এসে সংসার করিয়া আসিতেছি। ইহারপর ০৪-০৪-২০২৫ইং তারিখ দুপুরের দিকে আমার স্ত্রীর অনুরোধে তার পিত্রালয়ে বেড়াতে যাই। ইহার সুযোগে ০৫-০৪-২০২৫ইং তারিখ বেলা অনুমান ১১.৩০ ঘটিকার সময় উক্ত দ্বিতীয় স্ত্রী সুপালী বেগম তার কাছে রক্ষিত ব্যবসায় রাখা নগদ ৬০,০০০/- (ষাট হাজার) টাকা ও স্বর্ণ অলংকারসহ বিভিন্ন মালামাল প্রায় ৯০,০০০/- (নব্বই হাজার) টাকার জিনিসপত্র বস্তায় ভরিয়া মেয়েকে বাড়িতে রেখে বাড়ি হইতে বাহির হইয়া তার পিত্রালয়ে চলিয়া যায়। তখন আশপাশ লোকজন সাক্ষী ১। মোঃ আলতাব হোসেন, পিতা মৃত: অহির উদ্দিন ২। মোঃ নুরনবী, পিতা মৃত: ছমেদ আলী ৩। মোঃ লোকমান, পিতা মৃত: পিশু মামুদ, সর্ব সাং- কোদালখাতা, ওয়ার্ড নং- ০৯, ইউনিয়ন: মোগলহাট, থানা ও জেলা: লালমনিরহাটসহ আরও অনেকে আমার স্ত্রী চলিয়া যাওয়া ঘটনা দেখে ও শুনে। পরে আমি শ্বশুর বাড়ি হইতে বাড়িতে আসিয়া আমার স্ত্রীকে না দেখিয়া সাক্ষীগণের মাধ্যমে ঘটনা শুনি ও দেখি। ইহার পর আমার শ্বাশুরী তছিরন বেগমকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে আমার স্ত্রীর বিষয়ে জিজ্ঞাসা করিলে সে কোন ধরনের কথা বলে না, আবার কখনও মোবাইল ফোন রিসিভ করে না। আমার ও সাক্ষীদের ধারণা হইতেছে যে, আমার স্ত্রী ও তার মাসহ আমার টাকা ও মালামাল আত্মসাৎ করার জন্য আমার স্ত্রীর কোন সন্ধান দিতেছে না কিংবা আমার স্ত্রী অজ্ঞাতনামা ব্যক্তির সাথে অজ্ঞাত স্থানে চলিয়া গিয়াছে। বিষয়টি এলাকার লোকজনের সহিত আলোচনা করিয়া থানায় অভিযোগ দিতে বিলম্ব হইল। অতএব, বর্ণিত বিষয়ে তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনে জনাবের মর্জি হয়।

এলাকাবাসী বলেন, বাড়ি ছাড়ার আগের দিন পর্যন্ত তিনি স্বাভাবিক আচরণ করছেন। তাঁকে দেখে সন্দেহ হওয়ার কারণ নেই। বাড়ি থেকে চম্পট দেওয়ার পর বিষয়টি সামনে আসছে।

উক্ত গৃহবধূ বাড়ি থেকে চম্পট দেওয়ার আগে স্বামীর বাড়ির নগদ অর্থ ও সমস্ত অলঙ্কার নিয়ে চলে গিয়েছে।

সচেতন নাগরিকরা বলেন, কেউ কেউ ছেলে-মেয়েদের সঙ্গে নিয়ে যাচ্ছে। অনেকে আবার তাদের কথা ভাবছেই না। ছেলে বা মেয়েকে ঘরে রেখে প্রেমিকের হাত ধরে ঘর ছাড়ছে। শিশুদের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে। সন্তানের থেকেও বহু বধূর কাছে প্রেমিকের ভালোবাসা গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। বয়স সেক্ষেত্রে কোনও বাধা হচ্ছে না।

ভুক্তভোগী মোঃ ইসরাইল হোসেন বলেন, আমার স্ত্রী সুপালী বেগম আহম্মদ নামের এক ব্যক্তি তার মোবাইল ফোন নম্বরে প্রায় সময় আমার স্ত্রী কথাবার্তা বলে আসতো।

তিনি আরও বলেন, আমার শ্বশুর বাড়িতে খোঁজ খবর নিয়ে জানিতে পারি যে, আমার শাশুড়ি মোছাঃ তছিরন বেগম এর সহায়তায় আমার স্ত্রী সুকালী বেগম, আহম্মদ আলী (৫০), পিতা-অজ্ঞাত, সাং-হরদত্ত, কিশোরগঞ্জ, নওগাঁ এর বাড়িতে চলে যায়। বর্তমানে আমার স্ত্রী উক্ত বিবাদীর কাছে আছে বলে পরস্পর ভাবে জানতে পারি।

এ বিষয়ে তিনি আরও বলেন, লালমনিরহাট সদর থানায় অভিযোগ দিয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠাতে চেয়েছে।