প্রযুক্তি

শিক্ষার্থীদের চ্যাটজিপিটি প্লাস বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে ওপেনএআই

প্রিন্ট
শিক্ষার্থীদের চ্যাটজিপিটি প্লাস বিনামূল্যে ব্যবহারের সুযোগ দিচ্ছে ওপেনএআই

ছবি : ফাইল ফটো


প্রকাশিত : ৭ এপ্রিল ২০২৫, বিকাল ৪:১০

এআই প্রযুক্তির বিস্ময় চ্যাটজিপিটি প্লাস এবার কলেজ শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করল তার প্রিমিয়াম সংস্করণ। তবে এ সুযোগ আপাতত কেবল যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের জন্যই সীমাবদ্ধ। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা প্রতিষ্ঠান ওপেনএআই জানিয়েছে, আগামী মে মাস পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কোনো সাবস্ক্রিপশন ফি ছাড়াই চ্যাটজিপিটি প্লাস ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। 


সম্প্রতি এক ঘোষণায় ওপেনএআইয়ের নির্বাহী প্রধান স্যাম অল্টম্যান জানান, ভবিষ্যতের নেতৃত্ব দেবে তরুণ প্রজন্ম। আর তাই এআই প্রযুক্তিকে তাদের নাগালে পৌঁছে দিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে দুই মাসের এই বিনামূল্যের মেয়াদ শেষে ব্যবহারকারীরা যদি সাবস্ক্রিপশন বাতিল না করেন, সেক্ষেত্রে তাদের থেকে প্রতি মাসে ২০ ডলার করে চার্জ কাটা হবে।

এই সুবিধা পেতে শিক্ষার্থীদের যাচাই করা হবে *শেয়ার আইডি* নামের একটি নতুন যাচাই ব্যবস্থা দিয়ে। যারা যোগ্য বলে প্রমাণিত হবেন, তারা খুলতে পারবেন প্লাস সংস্করণে প্রবেশের দরজা।

পেইড বা প্লাস সংস্করণে ব্যবহারকারীরা পাচ্ছেন অনেক নতুন ও উন্নত ফিচার। উন্নত চ্যাটিং, ফাইল আপলোড, ছবি তৈরি এবং ভয়েস ও ভিডিও মাধ্যমে ইন্টারঅ্যাকটিভ কথোপকথনের সুযোগ থাকছে এই সংস্করণে। এর সঙ্গে রয়েছে অত্যাধুনিক জিপিটি-৪০ ও জিপিটি-০৩ মিনি মডেল, যেগুলোর মাধ্যমে আরও দ্রুত, নিখুঁত এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য সরবরাহ সম্ভব।

তবে শিক্ষার্থীদের হাতে এমন শক্তিশালী এআই সরঞ্জাম তুলে দেওয়াকে ঘিরে শুরু হয়েছে বিতর্ক। কেউ একে প্রযুক্তি শিক্ষার নতুন যুগের সূচনা বললেও, অনেকেই এর নেতিবাচক প্রভাব নিয়েও শঙ্কা প্রকাশ করছেন। কারণ, প্রযুক্তির দাপটে ক্লাসরুমে শিক্ষার্থীদের মৌলিক চিন্তা ও লেখার দক্ষতা ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন না বিশেষজ্ঞরা।

এই বিতর্ক নতুন কিছু নয়। ইতিপূর্বে গুগল তার নিজস্ব এআই চ্যাটবট *জেমিনি*-এর একটি শিক্ষার্থীবান্ধব সংস্করণ প্রকাশ করেছিল, যা কিশোর-কিশোরীদের জন্য বিশেষভাবে তৈরি। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাকাউন্টের অধীনে জেমিনিও বর্তমানে শিক্ষার্থীদের মাঝে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

বিশ্বজুড়ে শিক্ষাঙ্গনে জেনারেটিভ এআই-এর এই বিস্তার নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে—শিক্ষা কি প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মেলাতে পেরেছে? না কি প্রযুক্তির আধিপত্যে শিক্ষার প্রকৃত লক্ষ্যই হারিয়ে যাচ্ছে? এই প্রশ্নের জবাব সময়ই দেবে। তবে এটুকু নিশ্চিত, এআই এখন আর শুধু গবেষণাগারের বিষয় নয়, এটি ক্লাসরুমের মেঝে ছুঁয়ে ফেলেছে।