সারাদেশ

ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন সুন্দরবনের শাপলারবিল এলাকা, পানির অভাব

প্রিন্ট
ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন সুন্দরবনের শাপলারবিল এলাকা, পানির অভাব

ছবি : সংগৃহীত


প্রকাশিত : ২৪ মার্চ ২০২৫, বিকাল ৩:১১

পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের তেইশের ছিলার শাপলারবিল এলাকায় লাগা নতুন আগুন নিয়ন্ত্রণে থাকলেও ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন সুন্দরবনের শাপলারবিল এলাকা। রাতভর পানি ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা চালানো হলেও ভাটিতে খাল শুকিয়ে যাওয়ার কারণে পানির অভাবে পানি ছিটানো বন্ধ হয়ে গেছে। 


তবে বনবিভাগের সঙ্গে স্থানীয়রা যোগ দিয়ে আগুন নেভাতে প্রাণপণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এর আগে রবিবার বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে চাঁদপাই রেঞ্জের তেইশের ছিলার শাপলারবিল এলাকায় আগুন দেখতে পায় বনবিভাগ। পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এ সিএফ) দীপন চন্দ্র দাস এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।


জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর করেই সুন্দরবনে লাগা আগুন নেভাতে ফায়ার সার্ভিসের দশটি ইউনিট কাজ করছে। তারা দ্বিতীয় দিনের মতো আগুন নেভানোর কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। একদিকে পানির উৎস দূরে, অন্যদিকে জোয়ার ভাটার উপর নির্ভর হওয়ায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ও বনবিভাগকে। নতুন এলাকায় যাতে আগুন ছড়িয়ে না পড়ে, সেজন্য ফায়ার লাইন কেটে দেয় বনবিভাগ ও গ্রামবাসী।

খুলনা ফায়ার সার্ভিসের সহকারী পরিচালক (এডি) আবু বক্কর জামান জানান, রবিবার রাত ৯টায় মরা ভোলা নদীতে পাম্প মেশিন বসানোর কাজ শেষ করে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করা হয়। এই আগুন নেভাতে খুলনা ও বাগেরহাটের দশটি ইউনিট একযোগে কাজ করছে। পানির উৎস দূরে থাকায় আগুন নেভাতে বেগ পেতে হচ্ছে। তারপরে নদীতে জোয়ার ভাটার প্রভাব রয়েছে। জোয়ার ভাটা মাথায় রেখে আমরা কাজ করছি। আগুন যাতে বিস্তৃত না হয়, সেজন্য আগুনের স্থানের চারপাশে ফায়ার লাইন কেটে দিয়েছি এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছি। গভীর রাত পর্যন্ত পানি ছিটানোর কাজ চলেছে। সোমবার সকালে জোয়ার শুরু হওয়ার পর আবার পানি ছিটানোর কাজ চলছে। আমরা সেখানেই আগুনের কুন্ডলি ও ধোঁয়া দেখতে পাচ্ছি, তাই সেখানে পানি ছিটাচ্ছি। আমাদের পাশাপাশি বনবিভাগও তাদের নিজস্ব পাম্প দিয়ে পানি ছিটাচ্ছে। আগুন যাতে বাড়তে না পারে, সেজন্য প্রাণপণ চেষ্টা চলছে।

পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বনকর্মকর্তা (ডিএফও) কাজী মুহাম্মদ নূরুল করিম জানান, চাঁদপাই রেঞ্জের তেইশের ছিলার শাপলারবিল এলাকায় আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণ করতে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) দীপন চন্দ্র দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই ঘটনায় বনের আগুনের ঘটনা তদন্তে বনবিভাগ দুটি কমিটি গঠন করেছে।

বন অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগের বনসংরক্ষক (সিএফ) ইমরান আহমেদ জানান, তেইশের ছিলার শাপলারবিল এলাকায় লাগা আগুন থেমে থেমে জ্বলছে। রবিবার রাত থেকে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করে বনবিভাগ ও ফায়ার সার্ভিস। জোয়ারের পানি শেষ হওয়া পর্যন্ত পানি ছিটানোর কাজ চলেছে। পানির সংকট থাকায় বনের আগুন নেভানোর কাজে বেগ পেতে হচ্ছে। জোয়ারের পানির উপর নির্ভর করে এখানে আগুন নেভানোর কাজ করতে হচ্ছে। নদীর জোয়ারের পানি যতক্ষণ পাচ্ছে, ততক্ষণ তারা পানি ছিটাচ্ছে। তেইশের ছিলার চেয়ে শাপলারবিল এলাকায় আগুনের তীব্রতা বেশি ছিল। বনের আগুন কখন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আসবে তা এখন বলা যাচ্ছে না। তবে নতুন এলাকায় যাতে আগুন না ছড়ায়, সেজন্য প্রথমে ফায়ার লাইন কাটার কাজ করা হয়েছে। আগুন এখন নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে রয়েছে। বনে আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির হিসাব নিরূপণ করতে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসএফ) দীপন চন্দ্র দাসকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।